বিশেষ প্রতিনিধি জামালপুরঃ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারকে ঘিরে জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সংঘাত-সংঘর্ষ থামছেই না। এসব ঘটনার বেশির ভাগই ঘটছে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে। স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা: মুরাদ হাসান (ঈগল প্রতিক) এর নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর ও ১০ সমর্থককে আহত করেছে নৌকার প্রার্থী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান হেলালের সমর্থকরা ।
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ৮ টায় সরিষাবাড়ী পৌর এলাকার তাড়িয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ৮:৩০ থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত ১০ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে এর মধ্যে ৮ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার রবিউল ইসলাম। আহতরা হলেন মাইজবাড়ী গ্রামের রইচ মন্ডলের ছেলে রুবেল (৩০),আলা উদ্দিনের ছেলে সাদ্দাম (৩২), রইচ উদ্দিনের ছেলে রোকন (২৮), সুরুজ্জামানের ছেলে কফিল সরকার (২৫), মরহুম শামছুল এর ছেলে দিলখুশ (৪০), তাড়িয়াপাড়া গ্রামের শাহীনের ছেলে হামজা(১৮), শিমলা পল্লী এলাকার আহমেদ আলীর ছেলে ফারুক (২৫), আব্দুল জলিলের ছেলে ফরহাদ (২২)।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, পৌরসভার শিমলাপল্লী গ্রামের তাড়িয়াপাড়া এলাকায় কয়েকদিন আগে স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল প্রতিক) ডা. মুরাদ হাসান একটি নির্বাচনী ক্যাম্প নির্মান করেন। সোমবার রাত পৌনে আটটার দিকে তার কর্মী-সমর্থকরা ওই নির্বাচনী ক্যাম্পে যাচ্ছিলেন। ওই ক্যাম্পের সামনে পৌঁছামাত্র আগে থেকে উতপেতে থাকা নৌকার প্রতিকের কর্মী সমর্থকরা লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। সংবাদ পেয়ে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুশফিকুর রহমান এর নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে উভয়পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে জামালপুর থেকে র্যাব ১৪ সদস্যরা এসে উভয় পক্ষকে ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেন। আহত দিলখুশ জানান, আমরা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ করি। সরিষাবাড়ীতে আমরা রাজনীতি করি। আমরা যে যে জায়গায় যাইতেই পারি। আমরা নৌকার বিরুদ্ধে নয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে৷ জুব্বার কয়েলের ছেলে মান্নান টাকা খরচ কইরা একজন প্রার্থী হাত নিয়া আমাদের ওপর অন্যায় অত্যাচার করে আসছে। আমাকে আহত করেছে আমি শেখ হাসিনা ও প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই। আমি আওয়ামীলীগ কইরা দুইটা মাডার মামলা, অনেক গুলা মিথ্যা মামলার আসামী হয়ে হয়রানী হয়েছিলাম। এই আওয়ামীলীগ কইরা আমি আমার বাপেরে মাটি দিতে পারিনি। আমরা অফিসে বসে ছিলাম নৌকার প্রার্থী হেলালের সমর্থকরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেছে। আহত রুকন জানান, আমরা বসে নির্বাচনী অফিসে। এই সময়ে মান্নান ও কয়েকজন লোক গিয়ে পোলাপানদের জুতা দিয়া মারতেছিল। ওই টাইমে অফিস থেকে বাইরে বের হলে মান্নান সহ ২০/২৫ জন নৌকার সমর্থকরা এসে আমাদের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর ও আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা বিচার চাই।
এদিকে পৌর কাউন্সিলর সাখাওয়াতুল আলম মুকুল জানান, তাড়িয়াপাড়ায় ঈগল প্রতিকের নির্বাচনী অফিসে আমাদের লোকজন বসে ছিল। এ সময়ে নৌকা প্রতিকের লোকজন হামলা চালিয়ে নির্বাচনী অফিস ভাংচুর ও আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে পাশাপাশি চায়ের দোকানদারকেও মেরে আহত করেছে ।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এদিকে নৌকার প্রার্থী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান হেলালকে একাধিকবার কল দিলে রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুশফিকুর রহমান জানান, উভয় পক্ষ মারমুখী অবস্থায় হলে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে উভয় পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।