দেশজুড়ে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। প্রতীক বরাদ্দের পরপরই প্রার্থীরা নেমেছেন প্রচারণায়। পোস্টারিং, মাইকিং চলছে পুরোদমে। তবে ভিন্নচিত্র দেখা গেল ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনায়। নেত্রকোনা ৩ আসনের রামপুর বাজারের ইয়াছিন হোটেলের স্বত্বাধিকারী আব্দুস শহীদ ( ৫০) বলেন, ভোটের কোনো আলামত তো দেখি না। মিছিল নাই, মিটিং নাই, মাইকিং নাই, পোস্টারও নাই। অন্যান্য বছর তো অনেক বেচাকেনা হয়। এবার সেটাও নাই। এ কথার রেশ ধরে মাইকিং, পোস্টারিং করে কী হবে? যারা এলাকার জন্য কাজ করবে তাদেরই ভোট দেবে জনগণ। আসলে ছোট দলের প্রার্থীরা এ ক্ষেত্রে টাকা খরচ করতে চান না। তবে প্রার্থীরা জনগণের কাছে যাচ্ছেন।
এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের কেন্দুয়া জনগণ বরাবরই শান্তিপ্রিয়। এবার নেতাদের মধ্যে কিছু কিছু দ্ব›দ্ব হচ্ছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এবং দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগের যেসব নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন তাদের মধ্যে এটি দেখা যাচ্ছে। মনোনয়ন বঞ্চিতদের মধ্যে ক্ষোভের প্রকাশ ঘটছে। কারণ এসব এলাকায় রয়েছেন হেভিওয়েট প্রার্থী। তবে প্রার্থী নির্বাচনে এলাকাবাসীর চাওয়া- যারা এলাকার উন্নয়ন এবং জনগণের সুযোগ সুবিধা বেশি দেবেন তাদেরই তারা ভোট দেবেন বলে মনে করেন জনগণ ।জেলা পরিষদের সদস্য ও সদ্য দায়িত্ব শেষ হওয়া চেয়ারম্যান সালমা আক্তার বলেন, আওয়ামী লীগ করলেও যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তাদের ওপর হামলা মামলা করছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী।নেত্রকোনা-৩ (আটপাড়া-কেন্দুয়া) আসনে ৬ প্রার্থী। অসীম কুমার উকিল (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী ২ জন- মঞ্জুর কাদের কোরাইশী (ঈগল ) ও ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু (ট্রাক), জাতীয় পার্টির মো. জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া (লাঙ্গল), ইসলামী ঐক্যজোটের মো. এহতেশাম সারওয়ার (মিনার) ও তৃণমূল বিএনপির মিজানুর রহমান খান (সোনালী আঁশ)।
এদিকে নির্বাচন ঘিরে কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনাও ঘটেছে নেত্রকোনায় কেন্দুয়া । ১৯ ডিসেম্বর জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু ও অসীম কুমার উকিলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারধরের ঘটনায় ১২ জন আহত হন। কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর হয়। অসীম কুমার উকিলের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেছেন ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার।ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার আরও বলেন, প্রার্থীদের পোস্টার আছে। তবে আমার পোস্টার কম। লেমিলেটিং করে পোস্টার করতে হচ্ছে। আনতে হচ্ছে ঢাকা থেকে। সময় লাগছে। বাইরে পোস্টার না থাকলেও মানুষের মনে ঠিকই পোস্টার আছে। নির্বাচন নিয়ে কোন আশঙ্কা আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, হুমকি ধামকি পাচ্ছি। আমরাও যে আওয়ামী লীগ করি এটা নৌকার প্রতীক নিয়ে যারা নির্বাচন করছেন তারা মানতে রাজি না। পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করার মতো অবস্থা তাদের। ইতোমধ্যে এলাকায় কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। তা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে।অসীম কুমার উকিল বলেন, প্রচার প্রচারণা শুধু মাত্র পোস্টারিং না। এর মানে গণসংযোগ। তা প্রার্থীরা করছেন। নির্বাচনের পরিবেশ এখনো পর্যন্ত ভালো। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অভিযোগ তো করবেই। এটা নির্বাচনের অংশ। আমার এলাকায় সা¤প্রদায়িক উস্কানি দেয়ার পাঁয়তারা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ এসবের পক্ষে না। আমাদের প্রচারণা জোর কদমে চলছে।