টাঙ্গাইলের সখিপুরে তিন শিশু কন্যা নিয়ে স্বামীর ঘরের সামনে অবস্থান নিয়েছেন সেতু আক্তার (২৭) নামের এক নারী। গত তিনদিন ধরে চলছে এই অবস্থান কর্মসূচি। স্বামী উজ্জল মিয়া (৩৫) নিজের ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ছে। রাতে এসে ওই নারীকে টেনে হিঁচড়ে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
এ সময় সেতু আক্তারের পড়নের কাপড়-চোপড় ছিড়ে যায়। গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার বেড়বাড়ী খন্দকারপাড়া এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে ওই নারীকে লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় অনশনরত দেখা গেছে। প্রতিবেশী, পরিবারের লোকজন, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ১৬ বছর আগে উপজেলার বেড়বাড়ী গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে উজ্জলের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী বাসাইল উপজেলার জামাল মিয়ার মেয়ে সেতু আক্তারের বিয়ে হয়। ইতোমধ্যেই তাঁদের ঘরে এসেছে ফুটফুটে তিনটি কন্যা সন্তান। গত চার মাস আগে পারিবারিক কলহের জেরে উজ্জল মিয়া তাঁর স্ত্রী সেতুকে ডিভোর্স দেন।
এই ঘটনায় সেতু আক্তার টাঙ্গাইল আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক আইনে মামলা করেন। এতে স্বামী উজ্জল ডিভোর্স দেওয়া স্ত্রীকে পুনরায় গ্রহণ করবেন বলে ফুসলিয়ে মামলা তুলে বাড়ি ফিরে আসতে বলেন। স্ত্রী সেতু আক্তার বলেন, আমি বাড়িতে আসার পর আমাকে নানাভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। এই শীতের মধ্যে বাচ্চাদের নিয়ে ঘরের সামনে রাত কাটাচ্ছি। গতরাতে আমাকে সরানোর জন্য অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমি এখন বাবার বাড়িতেও ফিরে যেতে পারবো না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বছির উদ্দিন বলেন, আমি চেয়ারম্যান মহোদয়কে নিয়ে বেশ কয়েকবার বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেছি। মামলা থেকে জামিন পেয়ে উজ্জলের পাত্তাই পাওয়া যায়না। অভিযুক্ত উজ্জল মিয়ার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার স্ত্রী মোবাইল ফোনে অন্য কারও সঙ্গে কথা বলে। জানতে চাইলে সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শাহিনুর রহমান বলেন, তিনমাস আগে ডিভোর্সের মাধ্যমে তাঁদের ছাড়াছাড়ি হয়েছে। আইনত ওই মহিলা স্বামীর বাড়িতে থাকতে পারে না। তবে এ বিষয়ে সে আদালতে মামলা করতে পারে। ইতোমধ্যে ওই মহিলার স্বামী উজ্জল থানায় এসে অভিযোগ করেছেন। ওই মহিলাকেও থানায় আসতে বলা হয়েছে, বিষয়টি মীমাংসার জন্য উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে।