ঢাকা, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫: বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল ট্যুরিজম সম্মেলন ২০২৫। রাজধানীর ধানমন্ডির ড্যাফোডিল প্লাজায় আয়োজিত এ সম্মেলনে দেশি-বিদেশি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক, এবং বিভিন্ন হাসপাতালের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন (BMTA) এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার ওপর জোর দেওয়া হয়। সম্মেলনে ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ হেলথ ইকোনমিকসের অধ্যাপক ড. সায়েদ আব্দুল হামিদ উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন,
“বাংলাদেশে চিকিৎসা সেবাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে রোগীদের নিরাপদ পরিবহন, সহজলভ্য চিকিৎসা পরামর্শ এবং উন্নত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।”
পুলিশ সুপার মিসেস আসমা জামান রিতা তার বক্তব্যে বলেন,
“বাংলাদেশে আসা বিদেশি রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে জরুরি সেবা ৯৯৯-কে আরও কার্যকর করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” তিনি ড. সায়েদ আব্দুল হামিদের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করে বলেন যে, “রোগীদের নিরাপত্তা এবং সেবার মান উন্নয়নে যৌথ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।”
ইউনিভার্সাল মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আশিস কুমার চক্রবর্তী উল্লেখ করেন,
“বাংলাদেশে বর্তমানে এমন চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক মানের। যেমন, ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি স্ট্রোক করেন, যে চিকিৎসা তিনি আমেরিকায় পাবেন, তা বাংলাদেশেও সহজলভ্য। বিদেশে যেখানে চিকিৎসার জন্য ৫০-৬০ লাখ টাকা ব্যয় হয়, বাংলাদেশে তা মাত্র ৪-৫ লাখ টাকায় সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন,
“মেডিক্যাল ট্যুরিজম খাত থেকে সরকারকে কয়েক বিলিয়ন ডলার আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব।”
এই সম্মেলনে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তারা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং আগামীতে যৌথভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সম্মেলনের শেষাংশে বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি প্রফেসর ড. গোলাম মোহিউদ্দিন ফারুক বলেন,
“বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সুবিধা দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। এটি মেডিক্যাল ট্যুরিজমের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।”
দিনব্যাপী এই সম্মেলনের সমাপ্তি ঘটে ডিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে।