1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
পবিপ্রবিতে কোর্স ফর রোভার মেট ‘২৪ সম্পন্ন মিঠাপুকুরে বাঁশের বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ লোহাগাড়া প্রেসক্লাব’র নবনির্বাচিত কার্যকরী পরিষদের শপথ গ্রহণ সম্পন্ন রাবির নতুন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টে পরিচালক পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান হিলিতে ইউনিয়ন বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ে কর্মীসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে কর্মসূচীর নামে মানহানীর চেষ্টা, সর্বত্র প্রতিবাদের ঝড় দৌলতখানে ফসলের মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন ধানের শীষ, স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে কৃষকেরা চিরিরবন্দরে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে সাক্ষীগণের সংবাদ সম্মেলন পবিপ্রবিতে গভীর রাতে র‌্যাগিং নির্যাতন, আহত ৫ শিক্ষার্থী

কৃষি জমি নষ্ট করে মাছের ঘের তৈরি, সংখ্যালঘুর জমি দখলের অভিযোগ

মোঃ বুখারী মল্লিক 
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ৩৩০ বার পড়া হয়েছে
কৃষি জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করা যাবে না’- এমন সরকারি নীতিমালা থাকলেও ফসলি জমিগুলোকে পরিণত করা হচ্ছে পুকুরে। এক শ্রেণির অসাধু পুকুর ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন মহলকে নিয়ন্ত্রণ করে কৃষি জমিতে পুকুর খনন করছেন । ৪ বছর আগে একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অন্য একটি ঘের তৈরিতে এক সংখ্যালঘুর জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর গ্রামে ৬ একর এলাকা জুড়ে কৃষি জমিতে স্ক্যাভেটর দিয়ে পুকুর খনন করছেন গ্রামের একজন শিল্পপতি তানজিমুর রহমান তুহিন। ওই জমিতে পুকুর খনন করে সেই মাটি পার্শ্ববর্তী বোয়ালমারী উপজেলার আল-আলি অটো ব্রিক্স ইটভাটার মালিক শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর ভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এমন খবর শুনে ১৫ই জানুয়ারি রবিবার  সকাল ১০ঘটিকায় টায় সরজমিনে দেখা যায়, ২ ফসলি আবাদি জমিতে তিনদিন যাবৎ রাতে স্ক্যাভেটর দিয়ে মাটি খনন চলছে। সরকারের অনুমিত ছাড়াই  নিয়ম বহির্ভূত ভাবে কৃষি জমিতে  মাছের ঘের করতেই এই মাটি খননের কাজ।
অবারিত সবুজ হলুদের মাঠে  ইরি ব্লক এবং সরিষা খেত, যেখানে দৈনন্দিন কাজ করে আসছে এলাকার কৃষক। ক্ষেতে যেতে হলে একটি খাল পার হতে হয় সকলের, সরকারি খালকে বুজানো হয়েছে মাটি দিয়ে,  বড় বড় ট্রাক ও ট্রলিতে মাটি আনা নেওয়ার জন্য ইটের সলিং এর একমাত্র সড়কও হয়েছে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত কিন্তু সবাই নির্বিকার কেউ ভয়ে মুখ খুলছে না।
বিদ্যাধার গ্রামে একজনই সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বাসিন্দা দয়াল চন্দ্র বিশ্বাস কালবেলাকে বলেন, তাজমিনুর রহমান তুহিন আমার পাশের বাড়ির মানুষ, আমার একমাত্র সম্বল কৃষি জমি চাষ করে খেতাম সেটাও আমাকে ভয় দিয়ে জোরপূর্বক দখল করে তার ঘেরে মধ্যে নিয়ে গিয়েছে। প্রথম বছর আমাকে কিছু ধান দেয় ফসল দেয়, এই দুই বছর আমাকে কিছুই দেয় না চাইতে গেলে ভয় ভীতি দেখায়। আমি একা এই গ্রামে হিন্দু মানুষ আমাত কোন লোকজন নাই তাই আমি ভয় তে আর কিছু বলি না।
বিদ্যাধর গ্রামের বাসিন্দা মীর সাহেব আলি কালবেলাকে বলেন, বলেন তানজিমুর রহমান তুহিনের অনেক ক্ষমতা অনেক টাকা, কেউ তার বিরুদ্ধে ভয়ে কথা বলে না, আমরা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত  গ্রামের ফসলি জমি সে জোরজবোরদস্তি করে কিনছে দখল দিচ্ছে কিছু বললে তার মেম্বার আছে, লোক আছে। সে ইচ্ছা মত বেশি অংকের টাকা দিয়ে জমি কিনে এবং দখল দিয়ে কৃষি জমিতে বে আইনি ভাবে পুকুর কাটছে।
তাজমিনুর রহমান তুহিন, আলফাডাঙ্গার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধার গ্রামের বাসিন্দা ছাত্রজীবনে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত ছিলো, এলাকায় মাতুব্বরি করতেন জানা যায় এখনো তার মদদে গ্রামে অনেক কিছু হয়। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথেই তুহিনেরও আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হয়। পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় বারাষিয়া নামে একটি নিজেস্ব এনজিও রয়েছে তার। পরবর্তীতে এনজিওর টাকা থেকেই গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করেন। ঢাকায় তার দুইটা সোয়েটার ফ্যাক্টরি আছে এছাড়াও তুহিন আলফাডাঙ্গাতে দুটি প্রেসক্লাবের একটিতে আইন সম্পাদক হিসাবে আছেন। আওয়ামিলীগের রাজনীতিবিদদের সাথে সক্ষতা এবং  সাংবাদিক পরিচয়ে নিজস্ব বাহিনী দিয়ে বিদ্যাধর গ্রামের বিলে ব্যক্তি মালিকানা এবং ভিপি খাস ফসলি জমি বৈধ অবৈধ ভাবে ক্রয় করে  কৃষি জমিতে গড়ে তুলেছেন বড় বড় ৭ টি মাছের ঘের, যার প্রত্যেকটি ৩/৪ একরের মত। এলাকায় নিজেস্ব একটি বাহিনী থাকায় জোর পূর্বক হলেও গ্রামের জমি নিজের করে নিয়েছেন তানজিমুর রহমান তুহিন। প্রাণনাশের ভয়ে কেউ মুখ খুলে না।
তানজিমুর রহমান তুহিন কালবেলাকে ফোনে জানান,  মাছের ঘের তার, গতবছর ডিসি থেজে অনুমতি আনেন, এবছর আনেন নি। মাটি সহস্রাইলের একজনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে, তারাই ঘের কেটে দিচ্ছেন। এসময় তুহিন বিনয়ের সাথে প্রলোভন দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে,  যাতে নিউজ না করা হয়। সংখ্যালঘুর জমি দখল প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলে তুহিন বলেন, দয়াল বিশ্বাসকে কিছু টাকা দিয়েছি ব্যস্ততার জন্য দিতে পারিনাই তবে পরিশোধ করে দিবো।
আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বুলবুল কালবেলাকে বলেন, স্পষ্টভাবে নিষেধ আছে কোন ভাবেই আবাদি জমি, ফসলি জমি নষ্ট করে মাছের ঘের করা যাবে না আমি ইউ এনওর কাছে জানবো। সংখ্যালঘু দয়াল চন্দ্র বিশ্বাসের জমি তানজিমুর রহমান তুহিন অন্যায় ভাবে দখল করে নিয়েছে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, পার্মিশন ব্যতিরেকে কৃষি জমি কাটা যাবে না, শ্রেণিপরিবর্তন করা যাবে না। এটা ডিসি মহোদয়ের অনুমতি নিয়ে করতে হবে, আমরা যাচাই বাছাই করে এ বিষয়টি দেখবো। আপনারা তথ্য দিলে আমি ধরে নিয়ে আসবো। সংখ্যালঘু দয়াল চন্দ্র বিশ্বাসের জমি জোরপূর্বক দখল ইস্যুতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরো বলেন, সেটা সে আইনগত প্রতিকারের জন্য মামলা করতে পারবে।
এ বিষয়ে  ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কালবেলাকে জানান, আমার সাথে কেউ আলোচনা কিরেনি, অনুমতি নেইনি। কৃষি জমির আকার পরিবর্তন করা যাবে না, মাটি কাটার কোন সুযোগই নেই, আমাদের নলেজে আসলে আমরা বন্ধ করে দিবো তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ আর এভাবে দিনের পর দিন কৃষি জমি নষ্ট  হলে কৃষি জমির পরিমাণ যেমন কমবে তেমনি  খাদ্য উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিবে, কৃষক না খেয়ে মরবে। কৃষক বাচলে দেশ বাচবে তাই সবার একটি প্রত্যশা শুধু আইন করেই না, আইনের সঠিক প্রয়োগে  বন্ধ করতে হবে কৃষি জমির এমন ধ্বংসযজ্ঞ।
এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com