কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের ধর্মদহ গ্রামে অবস্থিত ফয়সাল ওয়াজেদ দাখিল মাদ্রাসার শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া শিক্ষক মামুন হোসেনের বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের অশালীন মন্তব্য ও কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা শনিবার সকাল ১০টার দিকে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষক মামুন হোসেন দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে আসছেন। একাধিকবার মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হলেও তারা কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সর্বশেষ, ১০ম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এক অভিভাবক বলেন, “আমরা আমাদের মেয়েদের নিরাপদে শিক্ষা গ্রহণের জন্য মাদ্রাসায় পাঠাই। সেখানে যদি শিক্ষকই হয় হুমকি, তাহলে সন্তানদের ভবিষ্যৎ কোথায়?” তিনি অভিযুক্ত শিক্ষকের স্থায়ী অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মামুন হোসেন বলেন, “শিক্ষার্থীদের শাসনের প্রয়োজন হলে মাঝে মাঝে কিছু বলতে হয়। কেউ যদি ভুল বুঝে থাকে, সেটা তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি।” তবে একাধিক ছাত্রী জানিয়েছে, শিক্ষক মামুন তাদের বিভিন্ন সময় অপ্রাসঙ্গিক কথা বলেন এবং অশোভন প্রস্তাব দিয়ে বিব্রত করেন।মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি শফিউল ইসলাম জানান, “আমি বর্তমানে বাইরে অবস্থান করছি। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। রোববার মাদ্রাসা কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”মাদ্রাসার সুপার আমিনুল ইসলাম (জহিরুল) বলেন, “আমরা উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনেছি। আগামীকাল কমিটির সভায় বসে বিষয়টি নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল হায় সিদ্দিকী বলেন, “মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি যাচাই-বাছাই করছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”স্থানীয়রা মনে করছেন, এমন ঘটনার দ্রুত ও কঠোর প্রতিক্রিয়া না এলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হবে। অভিভাবক ও এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে রোববারের মাদ্রাসা কমিটির সিদ্ধান্ত এখন সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।