নাসিরনগরের হরিপুর গ্রামে অবস্থিত হরিপুর জমিদার বাড়ি ইতিহাস, ঐতিহ্য আর স্থাপত্যের এক জীবন্ত সাক্ষী। শত বছরের পুরনো এই জমিদার বাড়ি এক সময় জমিদারি সংস্কৃতি ও সমাজ নেতৃত্বের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। তবে কালের ব্যবধানে এখন তা পড়ে আছে প্রায় অবহেলিত অবস্থায়। আর এর সবচেয়ে বড় কারণ—রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও ভয়াবহ রাস্তার দুরবস্থা।
রাস্তায় দুর্ভোগ, পর্যটকে ভাটা:যারা ইতিহাস ও পুরাকীর্তি ভালোবাসেন, তাদের জন্য হরিপুর জমিদার বাড়ি একটি আকর্ষণীয় স্থান হতে পারত। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থেকে নাসিরনগর হয়ে হরিপুর পর্যন্ত যে রাস্তাটি রয়েছে, সেটির অবস্থা খুবই করুণ। অধিকাংশ স্থানে গর্ত, ভাঙাচোরা কার্পেটিং, বর্ষায় পানি জমে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মালেক বলেন, “রাস্তার যা অবস্থা, তাতে কেউ ইচ্ছে করলেও বারবার আসতে চায় না। একেকটা গর্ত যেন যাত্রার সব আনন্দই কেড়ে নেয়।”
আরেকজন স্থানীয় তরুণ জানান, “অনেকেই আসে ইউটিউবে দেখে বা শুনে, কিন্তু একবার এলে দ্বিতীয়বার আসার সাহস করে না। পর্যটন হলে আমাদের এলাকাও উন্নত হতো।”
রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে গুরুত্ব জরুরী:একদিকে বাড়ির ভেতরে দরজার পোকা ধরা কাঠ, ফাটল ধরা ছাদ, ঘাসে ঢাকা উঠান; অন্যদিকে যাওয়ার দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা—এই দুইয়ের মিলেই হারিয়ে যাচ্ছে সম্ভাবনাময় এক ঐতিহাসিক স্থান।
সমাধান কী হতে পারে?
এই ঐতিহ্য রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ প্রয়োজন। পর্যটনবান্ধব যোগাযোগ ব্যবস্থা, বাড়ির সংরক্ষণ, তথ্যকেন্দ্র স্থাপন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে হরিপুর জমিদার বাড়ি হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের অন্যতম ভ্রমণ গন্তব্য।ইতিহাস শুধু বইয়ে থাকার জন্য নয়, চোখে দেখার ও অনুভব করারও বিষয়। হরিপুর জমিদার বাড়ি আমাদের সেই অনুভবের এক নীরব স্মারক—যা এখনই রক্ষা না করলে, হারিয়ে যাবে অতল অতীতে।