‘পিকেসিএসবিডি ক্রিকেট ট্যালেন্ট হান্ট-২০২৫’-এর বিভাগীয় পর্যায়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ভোলার মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী— মোঃ জোবায়ের (পিতা: মোঃ বেলায়েত ) ও মোঃ সাহেদুর রহমান মাহিন (পিতা: মোঃ আব্দুর রহমান দুলাল)। গত ১৬ মে ভোলা জেলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতার জেলা পর্যায়ের বাছাই পর্বে অংশ নেয় মনপুরার চারজন শিক্ষার্থী। ব্যাটিং, বোলিং ও উইকেট কিপিং বিভাগে অংশ নেওয়া এই কিশোরদের মধ্য থেকে দুইজন উত্তীর্ণ হয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে খেলার সুযোগ পায়, যা পুরো বিদ্যালয় এবং পরিবারে আনন্দের আমেজ তৈরি করেছে। পিকেসিএসবিডি ‘কে হবে আগামীর টাইগার’ স্লোগানে সারা দেশে তরুণ ক্রিকেট প্রতিভা অন্বেষণের এই আয়োজন করছে। প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ধাপে উত্তীর্ণদের উন্নত ট্রেনিং, ১০০টি ফ্রি ম্যাচে অংশগ্রহণ এবং প্রফেশনাল ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ দেওয়া হবে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, “আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় পর্যায়ে উত্তীর্ণ হওয়ায় আমরা গর্বিত। ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।” অভিভাবক মোঃ বেলায়েত হোসেন বলেন, “আমার ছেলে ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট ভালোবাসে। আজ সে বিভাগীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে, আমরা খুব খুশি। সরকারের কাছে অনুরোধ থাকবে, যেন এ ধরনের প্রতিভা অন্বেষণ সুষ্ঠুভাবে সারা দেশে পরিচালিত হয়।” এদিকে, মনপুরা সরকারি ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মোঃ তামজিদ আহমেদ সামি এক আবেগঘন বার্তায় ফেসবুকে লেখেন— “অভিনন্দন তোমাদেরকে। ক্রিকেট ট্যালেন্ট হান্ট-২০২৫ এ জেলা থেকে বিভাগীয়, বিভাগীয় পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায়ে উত্তীর্ণ হওয়ায়। তোমাদের থেকেই আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। আমরা তোমাদের সিনিয়র হয়েও কলেজের বিভিন্ন দুর্বলতার কারণে জেলা পর্যায়েও যেতে পারিনি। সেখানে আজ তোমরা জাতীয় পর্যায়ে!!!” তিনি আরও বলেন, “আমার মনে হয়, আমাদের মনপুরার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সচেতন মহল যথাযথভাবে শিক্ষার্থীদের প্রতিভার মূল্যায়ন করে না। জেলায় প্রতিষ্ঠানভিত্তিক যেকোনো আয়োজন হলে মনপুরা ছাড়া অন্যান্য উপজেলা অংশ নেয়, অথচ আমরা জানতেই পারি অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর। এবার উপজেলার বিজ্ঞানমেলায় আমাদের কলেজ প্রথম হলেও আমরা জেলা পর্যায়ে অংশ নিতে পারিনি, কারণ আমরা জানতামই না।” তার ভাষ্য মতে, “এই ধারাবাহিকতা না বদলালে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতিভা মূল্যায়িত হবে না। তাই আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে, শিক্ষার্থীদের প্রতিভাকে গুরুত্ব দিয়ে যথাযথ সুযোগ দিতে হবে।” শিক্ষার্থীদের এমন অর্জন যেমন গর্বের, তেমনি তামজিদের মতো সচেতন কণ্ঠগুলো শিক্ষা ও খেলাধুলার সমন্বয়ে একটি উন্নত সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।