খুলনার কয়রা সদর ইউনিয়নের সুতি বাজার সংলগ্ন শাকবাড়িয়া খালের ওপর নির্মিত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্লুইসগেটের দুই পাশের মাটি সরে গিয়ে ভয়াবহ ধস দেখা দিয়েছে। গত সোমবার সকালে ভাটার টানে এই ধসের ঘটনা ঘটে, যা স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, সামান্য জোয়ারেই গেটটি ভেঙে বিস্তীর্ণ জনপদ লবণ পানিতে প্লাবিত হতে পারে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শাকবাড়িয়া খালের এই বড় স্লুইসগেটটি উপজেলায় পানি প্রবেশ ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গেটে ধস দেখা দেওয়ায় কৃষিকাজে মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। মঠবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা লুৎফর মোল্যা জানান, স্লুইসগেটটি নির্মাণের পর থেকে প্রায় প্রতি বছরই এমন ফাটল দেখা দেয়। গেটের দুই পাশে ভালোভাবে কাজ না হওয়ায় স্লুইসগেটের নিচের অংশে ফাঁকা সৃষ্টি হয়েছে, যার কারণে হঠাৎ এক পাশ ধসে পড়েছে। এর আগেও কয়েকবার এমন ধসের ঘটনা ঘটলেও কর্তৃপক্ষ স্থায়ী সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এলাকাবাসীর শঙ্কা, স্লুইসগেটটি পুরোপুরি ধসে গেলে জোয়ারের পানিতে কয়রা, মহারাজপুর, মহেশ্বরীপুর, বাগালী ও উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হবে এবং কৃষি জমি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত স্লুইসগেটের ধসে যাওয়া স্থানটি মেরামতের দাবি জানিয়েছেন।
মহারাজপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু সাইদ মোল্যা বলেন, সুতিবাজার সংলগ্ন স্লুইসগেটের পাশে ফাটল দেখা দিয়েছে। দ্রুত মেরামত করা না গেলে এটি বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তিনি সতর্ক করেন যে, এটি মেরামত না করা হলে এই স্থান দিয়ে ভেঙে গেলে মহারাজপুর ও পার্শ্ববর্তী কয়রার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়বে। কয়রা সদর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এস এম লুৎফর রহমান জানান, স্লুইসগেটটি নির্মাণের পর থেকে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই ফাটল ও ধস দেখা যায়। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে তাৎক্ষণিক নামমাত্র কিছু কাজ করা হয়, কিন্তু স্থায়ী সমাধানের জন্য কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। তিনি বলেন, দ্রুত মেরামত না করা হলে স্লুইসগেট দিয়ে পানি নিষ্কাশন সম্ভব হবে না, বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে এবং কৃষকের অনেক ক্ষতি হবে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে মাঝে মাঝে স্লুইসগেটের পাশ দিয়ে ঘোগার সৃষ্টি হয়ে মাটি সরে যায়। তিনি বিষয়টি জেনেছেন এবং জরুরী ভিত্তিতে ধসে যাওয়া স্থান মেরামত করা হবে বলে জানিয়েছেন। এই গুরুত্বপূর্ণ স্লুইসগেটটির দ্রুত ও স্থায়ী মেরামত এখন কয়রা অঞ্চলের মানুষের প্রধান দাবি।c