নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জগনাদি গ্রামটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা। তিন দিকজুড়ে সবুজ ফসলের মাঠ, পাখির কলকাকলি আর শান্ত পরিবেশ গ্রামটিকে অনন্য বৈশিষ্ট্য দিয়েছে। এখানে প্রায় ১,০০০ মানুষ বসবাস করেন, যাদের মধ্যে ৯০% শিক্ষিত। পেশার দিক থেকে গ্রামবাসী ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী ও কৃষিজীবী। প্রায় প্রতিটি পরিবারেই একজন প্রবাসী আছেন, যারা বিদেশ থেকে কষ্টার্জিত অর্থ পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
তবে এই গ্রামের সবচেয়ে বড় সমস্যার নাম যোগাযোগ ব্যবস্থা। গ্রামে কোনো পাকা রাস্তা নেই; কেবল কাঁচা মাটির রাস্তাই ভরসা। রাস্তাগুলো এতটাই সংকীর্ণ ও অগোছালো যে, এক বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে আরেক বাড়ির যাতায়াত চলে। প্রবাসীরা বিদেশ থেকে ফিরেও নিজের মালপত্র গাড়িতে করে আনতে পারেন না; বাধ্য হয়েই হাতে বা মাথায় করে বহন করতে হয়।
বর্ষাকালে সমস্যাটি আরও প্রকট হয়। টানা বৃষ্টিতে রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে যায়, চলাচল বন্ধের উপক্রম হয়। কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে (যেমন রোগী হাসপাতালে নেওয়া) গ্রামবাসীকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
গত কিছুদিনের টানা মুষলধারে বৃষ্টিতে জগনাদি গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। পায়ে হেঁটেও চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়ায় গ্রামের যুবসমাজ ও ছাত্রসমাজ একজোট হয়ে রাস্তাঘাট সাময়িকভাবে মেরামতের উদ্যোগ নেয়। ইট, বালু ও ইটের গুঁড়া দিয়ে তারা রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করেন।
এ কাজে নেতৃত্ব দেন মোঃ সোহেব ভূঁইয়া। তার সাথে ছিলেন মাহবুব, ফাহিম, সজল, জিসান, রাব্বি, ইমন, বড় রাব্বি ও জাবেদ । তাদের কঠোর পরিশ্রমের ফলে এখন অন্তত পায়ে হেঁটে চলাচল সম্ভব হচ্ছে। যদিও গাড়ি চলাচল এখনও সম্ভব নয়, কিন্তু গ্রামবাসী এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, “যুবসমাজের এই চেষ্টায় সাময়িকভাবে হাঁটার সুযোগ তৈরি হলেও, স্থায়ী সমাধানের জন্য পাকা রাস্তার ব্যবস্থা করা জরুরি। সরকারি সহায়তা ছাড়া এটি সম্ভব নয়।”
গ্রামের মানুষ এখন একটাই দাবি জানাচ্ছেন—অতিদ্রুত আধুনিক ও টেকসই সড়ক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হোক, যাতে তাদের যাতায়াতের ভোগান্তি দূর হয়।