সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর আত্মহত্যার নাটক সাজানোর অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার নলতা ইউনিয়নের বেজেরাটি গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।

ঘটনার বিবরণ
নিহত গৃহবধূর নাম মোমেনা বেগম (৫০)। তিনি বেজেরাটি গ্রামের মইনুদ্দিনের স্ত্রী এবং দেবহাটা থানার হাদিপুর/জগন্নাথপুর গ্রামের নুর আলী কারিকরের কন্যা।
অভিযোগ অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে মোমেনা বেগম এবং তাঁর স্বামী মইনুদ্দিনের মধ্যে পারিবারিক কলহ ও ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকত। এই কলহের কারণে তাদের ছেলে এবং পুত্রবধূ আলাদা জায়গায় থাকতেন।
নিহতের ভাই আব্দুল আজিজ সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে মইনুদ্দিন বাজার থেকে মাছ-শাকসবজি কিনে বাড়িতে নিয়ে আসার পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আবারও ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে মইনুদ্দিন তাঁর বোন মোমেনাকে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। হত্যার পর সে ঘরের দরজায় তালা ঝুলিয়ে নলতা বাজারে তাঁর ‘ভাই ভাই হার্ডওয়্যার’ দোকানে চলে যান।
বেলা ১টার দিকে নিহতের ভাই আব্দুল আজিজ ফোন করে মোমেনাকে না পেয়ে সন্দেহ করেন। এরপর তিনি বাজার থেকে ভগ্নিপতি মইনুদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে আসেন। হাতুড়ি দিয়ে ঘরের দরজার তালা ভেঙে তাঁরা ভেতরে প্রবেশ করে মেঝেতে মোমেনার লাশ দেখতে পান।

স্বামীর পরস্পর বিরোধী বক্তব্য
এলাকাবাসীর ধারণা, মইনুদ্দিন তাঁর স্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঘরে তালা লাগিয়ে দোকানে চলে যান এবং পরে স্ত্রীকে আত্মহত্যা করেছেন বলে চালানোর চেষ্টা করছেন।
তবে, বিষয়টি নিয়ে মইনুদ্দিন পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি জানান, সকালে বাজার করে দিয়ে তিনি দোকানে চলে যান। শ্যালকের ফোন পেয়ে বাড়িতে এসে তালা ভেঙে ঘরের ভিতর মেঝেতে গলায় গামছা দিয়ে ফাঁস দেওয়া স্ত্রীর লাশ দেখতে পান।

পুলিশের পদক্ষেপ
খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ জুয়েল আহমেদ এবং উপ-পরিদর্শক শাহাদাত হোসেন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নিয়ে আসে।
এসময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ নিহতের স্বামী মইনুদ্দিন এবং তাঁদের পুত্র মোখলেসুর রহমানকেও আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
এলাকাবাসী এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীর কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।