টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এখন শুধুই ফসলের মাঠ। যতদূর চোখ যায় শুধু ভুট্টা গাছের পাতায় সবুজের সমারোহ। আবহাওয়া অনূকূলে থাকলে চলতি বছরে ভুট্টার বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখেছিলেন চাষিরা। তবে কৃষকদের এমন স্বপ্ন ভঙ্গ করে দিচ্ছে আর্মিওয়ার্ম নামে এক জাতের ক্ষতিকারক পোকা। কীটনাশক ব্যবহার করেও ক্ষতিকর এ পোকা দমন করতে পারছেন না চাষিরা। ফলে দুশ্চিন্তায় পড়েছে এখানকার ভুট্টা চাষিরা।
উপজেলার এই সকল চরাঞ্চল গুলো পরিদর্শক করে দেখা যায় গাবসারা ইউনিয়নের এর গাবসারা, কালিপুর, জয়পুর, রেহাইগাবসার, চন্ডীপুর, রুলীপাড়া, পুংলীপাড়াসহ অর্জুনা ও নিকরাইল ইউনিয়নের যমুনার চরের ভুট্টার জমিতে ভোর থেকে চরাঞ্চলের কৃষকেরা ভুট্টা গাছের পরিচর্যা করছেন কেউ কেউ পোকা দমন করার জন্য কীটনাশক দিচ্ছে।এদিকে পোকা দমনে উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শনসহ সকল প্রকার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
চরাঞ্চলের ভুট্টা চাষি সিরাজ মিয়া বলেন, গত বছর আমি প্রায় ১৬ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছিলাম। ভুট্টার বাম্পার ফলন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় এবছ প্রায় ২০ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। তবে হঠাৎ করে ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ ভুট্টা গাছের অনেক ক্ষতি হয়েছে। যার কারণে ফলন নিয়ে অনেকটাই চিন্তিত রয়েছি।
রুলীপাড়া গ্রামের ভুট্টা চাষি নাজিম উদ্দীন বলেন, ভুট্টা গাছ যখনি বেড়ে উঠতে শুরু করেছে ঠিক তখনি পোকার আক্রমণে গাছগুলো দুর্বল করে ফেলেছে। চলতি বছর আমরা ভুট্টার ভালো ফলন হবে কিনা তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি। অতিরিক্ত পরিমাণ কীটনাশক ব্যবহারে অনেক ভুট্টা গাছ মরেও গিয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছর যমুনা চরাঞ্চলসহ উপজেলায় ৩ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়। বাম্পার ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় চলতি বছর আরও ৪০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধি পেয়ে ৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে।
ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আরিফুর রহমান বলেন, পোকার আক্রমণ নিয়ে চাষিদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই। আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত ভুট্টার মাঠ পরিদর্শন সহ নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছেন। সঠিক নিয়মে কীটশনাক ব্যবহারে পোকার উপদ্রব হ্রাস করা সম্ভব। এছাড়া ঘন কুয়াশার ও শৈত্য প্রবাহ আর কয়েকদিন থাকলে পোকার উপদ্রব এমনিতেই কমে যাবে।