অনলাইন ডেস্ক : আমেরিকায় এক কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে পুলিশি নিগ্রহের ভিডিও প্রকাশে উত্তাল বিশ্ব। দেশটিতে বর্ণ বৈষম্যের অবসানের দাবিতে যুগে যুগে অনেক আন্দোলন হয়েছে। তবে এবার এ বিক্ষোভও অনন্য মাত্রায় আন্দোলনের রূপ পেয়েছে। এ আন্দোলনে একাত্ম হয়েছেন হলিউড ও বলিউড তারকারাও।
হলিউডের এক ঝাঁক তারকা সুর মিলিয়েছেন বর্ণবিরোধী আন্দোলনে। এদের মধ্যে রিহানা, অ্যালিসিয়া কিজ, রেডিয়োহেড, কোল্ডপ্লে, কেলি রোল্যান্ড, বেস্টি বয়েজ শামিল হয়েছেন প্রতিবাদে। এছাড়া গ্যাল গ্যাডট, লিলি রেনহার্টও বুঝিয়ে দিয়েছেন, ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’।
বলিউডেও উঠেছে এই প্রতিবাদের ঢেউ। করণ জোহর, ভিকি কৌশল, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, সারা আলি খান, তারা সুতরিয়া, কারিশমা কাপুর, রিতেশ দেশমুখ, রাধিকা আপ্তে, নেহা ধুপিয়া, প্রীতি জিনতা, সুজান খানও সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছেন কালো ছবি। তবে প্রতিবাদ করেও ট্রলের শিকার হয়েছেন অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খান।
হলিউডের নানা তারকার সঙ্গে এই প্রতিবাদে প্রথম গলা মিলিয়েছিলেন কারিনা কাপুর। কিন্তু ট্রল ছাড়েনি তাকে। ‘আজনাবি’ সিনেমায় সহ-অভিনেত্রী বিপাশা বসুকে ‘কালি বিল্লি’ বলে সম্বোধন করেছিলেন কারিনা। এর পরে কারিনা-বিপাশার এই ‘কালো বিড়াল’ সংক্রান্ত ঝামেলা বহু দিন চলেছিল। তাই জর্জ ফ্লয়েডের ঘটনায় কারিনাকে প্রতিবাদ করতে দেখে ইনস্টাগ্রামে অনেকেই সেই পুরনো ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে বলছেন, ‘নিজের জীবনের সেই ঘটনা কি ভুলে গিয়েছেন?’
কেউ আবার কারিনার ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপনে মুখ দেখানোর ঘটনাকেও মনে করিয়ে দিয়েছেন। একবার দিশা পাটানি শেয়ার করেছিলেন, ‘অল কালার ইজ বিউটিফুল!’ তাহলে প্রসাধনী মেখে রং বদলানোর ব্যবসায় কারিনা বা দিশা নিজেদের জড়িয়েছিলেন কেন, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। নেটিজেনদের অভিযোগ, ভারতের অভ্যন্তরেও যে বৈষম্যের ঘটনা ঘটে তা নিয়ে কেন কথা বলেন না এখনকার প্রতিবাদীরা। কাশ্মীর ইস্যুতে কিংবা দেশের অভ্যন্তরে সংখ্যালঘুদের বিষয়ে কেন চুপ থাকেন তারা।
তবে প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে শুধু নেটিজেনরাই যে কথা বলেছেন, এমন নয়। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন সাহসী অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌত। অপ্রীতিকর বিষয়েও স্পষ্ট কথা বলার জন্য বিশেষ নামডাক আছে তার। তিনি বলেন, ক’সপ্তাহ আগেই পালঘরে যেভাবে সাধুদের হত্যা করা হলো, কই সে নিয়ে তো কেউ মুখ খোলেনি! ঘটনাটা ঘটেছিল মহারাষ্ট্রেই, যেখানে বেশির ভাগ সেলেব্রিটিরা থাকেন।
প্রতিবাদের নানা স্তর থাকে। একটি ঘটনার প্রতিবাদ যে আরও নানা ঘটনায় মুখ বন্ধ করে থাকার স্মৃতি এভাবে উস্কে দেবে, তা হয়তো বুঝে উঠতে পারেননি প্রতিবাদী তারকারাও।