বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মোংলা পৌর শাখার নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মানিক বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকার ও নির্বাচন কমিশন পরিকল্পিতভাবে এটি করেছে। এটি বাগেরহাট-৩ আসন তথা জেলাবাসি এটি কোনভাবেই মেনে নেবে না। সরকারের নীল নকশা কখনোই বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না। বিশেষ করে বাগেরহাট-৩ আসন ভাঙ্গার চেষ্টা করলে সর্বস্তরের জনতাকে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে ঘোষণা দেন এই নেতা।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মোংলা পৌর শাখার আয়োজনে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক (বাগেরহাট-৪) সংসদীয় আসন বিলুপ্তি করা এবং মোংলা-রামপাল পৃথক করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, বাগেরহাটে চারটি আসন থেকে একটি কমানোকে আমরা ষড়যন্ত্র মনে করছি। সুন্দরবন, মোংলা বন্দর, ষাট গম্বুজের মতো বিশ্ব ঐতিহ্য যেখানে রয়েছে, সেই জায়গাটাকে দুর্বল করার জন্য একটি ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা এটাকে অন্যায় মনে করছি, আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সরকারকে এই সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসার দাবি জানাচ্ছি। বাগেরহাটের জন্য একটি অপমানিত ব্যাপার। এটি একটি প্রাচীন শহর, এখানে দিন দিন আরো আসন বাড়ানো উচিত। সামনে সংসদ নির্বাচন আছে, এই নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এগুলো করা হচ্ছে। এই দাবি না মানা হলে ভবিষ্যতে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।
এর আগে মোংলা পৌর মার্কেট চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় মোংলা পৌর মার্কেট চত্বরের সামনে এক সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশের নেতৃবৃন্দ নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে চারটি আসন করার দাবি জানান। তারা বলেন নির্বাচন কমিশন চারটি আসন পুন:বহাল না করলে দোকান পাট সহ প্রয়োজনে মোংলা বন্দর অচল করে দেওয়া হবে।
এসময় বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল হালিম খোকন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি আ. মান্নান হাওলাদার, পৌর বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব মো: খোরশেদ আলম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি শেখ আবু হানিফ, নব-নির্বাচিত পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তালুকদার মো. নাসির উদ্দিন, মো. গোলাম নুর জনি, উপজেলা বিএনপি নেতা শেখ রুস্তম আলী, পৌর বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান টুটুল, পৌর ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম সহ পৌর বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সংবিধানের ১১৯-১২৪ ধারা অনুযায়ী জাতীয় সংসদের আসন সীমানা পুনর্নির্ধারণের অংশ হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত এসেছে। বাগেরহাট-২ ও বাগেরহাট-৩ আসনের সীমানা নতুন করে নির্ধারণের সম্ভাবনার কথা জানানো হয়। নতুন বিন্যাসে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী, ফকিরহাট, মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর, কচুয়া ও রামপাল) এবং বাগেরহাট-৩ (মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা)।
জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক অবস্থানের যুক্তি ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, বাগেরহাট জেলার আয়তন ৩,৯৫৯.১১ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ১৬ লাখ ১৩ হাজার। জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক বিস্তৃতি বিবেচনায় এই জেলা এখনো চারটি আসন রাখার যোগ্য বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।