রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তি পরীক্ষার সময়ে রাজশাহীর কতিপয় মেস মালিক ডাকাতের বেশ ধারণ করে। একরাতের জন্য তারা দুই-তিন হাজার টাকাও নিয়ে থাকে। তাদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সুবিধাবাদী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও করে আবাসন বাণিজ্য। কিন্তু এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনো কার্যকারী পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায় না। তবে কি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের কাছে অসহায় কিংবা প্রভাব বিস্তারে অক্ষম?
রোববার (৩ মার্চ) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক ভর্তি পরীক্ষার সময় মেস মালিকদের দৌরাত্ম্য ও আবাসন ব্যবসার প্রতিবাদে আয়োজিত এক মানববন্ধনে সংগঠনের নেতাকর্মীরা এসব কথা বলেন।
এসময় তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ ৫০টির অধিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবাসন ব্যবসার সাথে জড়িয়ে গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি কিভাবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নাম ছড়াচ্ছে। কিছু সুবিধাবাদীর জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা লজ্জিত হচ্ছে। আমরা সাময়িকভাবে তাদেরকে বয়কট করার মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ফাহিম রেজার সঞ্চালনায় সংগঠনের সভাপতি মেহেদী সজীব বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় একটি গৌরবের জায়গা কিন্তু সেই গৌরবের জায়গাটি কিছু সুবিধাবাদীর কারণে আজ ধ্বংসের পথে। আবাসন ব্যবস্থা আর মেস মালিকদের দৌরাত্ম্যের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। অবিলম্বে আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি সকল আবাসন ব্যবসায়ীদের বয়কট করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট আমাদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা রক্ষা করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। এসব ব্যবসায়ীদের লাগাম টেনে ধরুন।
এসময় অনিক আহমেদ বলেন, আমাদের জন্য ইদ দুটি হলেও রাজশাহীবাসীর জন্য তিনটি। রোজার ইদ, কুরবানির ইদ ছাড়াও ভর্তি পরীক্ষা তাদের জন্য আরেকটি ইদ। তারা ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের রক্ত চুষে খায়। প্রতিবছর প্রায় ২ লক্ষ শিক্ষার্থী রাবি পরীক্ষা দিতে আসে। এই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের মেস মালিকরা শুরু করে রমরমা আবাসন ব্যবসা। পরিতাপের বিষয় এই ব্যবসার সাথে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও জড়িত। রাবি প্রশাসন যদি পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তাহলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবো। মেস মালিক সমিতির সাথে বৈঠক করে সুষ্ঠু সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভুমিকা রাখবে বলে আমি আশাবাদী।
সংগঠনটির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শাহীন জোহরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা দিতে অনেকে দূর দূরান্ত থেকে আসে। মেস মালিকের অসহযোগিতা ও আবাসন ব্যবসার কারণে তারা নানারকম দুর্ভোগের শিকার হয় তাদেরকে। মেস মালিকরা যেন অতিরিক্ত ভাড়া না নিতে পারে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
এসময় সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী এ মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।