রংপুরের মিঠাপুকুরে মাদক ব্যবসায়ীর ছুরিকাঘাতে এক যুবক আহত হয়েছেন। আহত যুবক বর্তমানে মিঠাপুকুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার নাম রাসেল মিয়া (২২)। সে উপজেলার নুরপুর গ্রামের মনোয়ার হোসেনের ছেলে।
রোববার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার রানীপুকুর ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। পরে তাকে উদ্ধার করে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন স্বজনরা। সরেজমিনে ও মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, আহত রাসেলের মাথার সামনের বাম পাশের অংশে মারাত্বকভাবে আঘাত রয়েছে। তার শরীরের পিঠে, কাধে, হাতে ও কোমরেও আঘাত রয়েছে।
চিকিৎসাধীন যুবকের বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আহত রাসেলের মাথায় চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। তার চিকিৎসা চলমান আছে। অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হতে পারে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আল মোজাহিদ বলেন, নুরপুর গ্রামকে মাদকমুক্ত রাখতে উদ্যোগ নেয় স্থানীয়রা। সাবেক ওসি মোস্তাফিজার রহমানের উপস্থিতিতে গ্রামে একটি মাদকবিরোধী সভা করা হয়।
সেই সভায় প্রকাশ্যে আর কোনদিন মাদক বিক্রি করবে না বলে কথাও দিয়েছিল মাদক কারবারি জুয়েল বাবু ঝন্টু। কিন্তু সে বিভিন্ন কৌশলে আবার মাদক ব্যবসা শুরু করে। আজ সকালে এক যুবকের কাছে হিরোইন বিক্রির সময়
মাদকবিরোধী কমিটির সদস্য রাসেল বাধা দিলে তার উপর হামলা চালায় মাদক কারবারি জুয়েল বাবু ঝন্টু ও তার দলবল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হামলার শিকার রাসেল মিয়া বলেন, সকালে গ্রামের মোড়ে আসলে জুয়েল বাবু ঝন্টু একজনকে হিরোইন দিচ্ছে দেখতে পাই। তাৎক্ষনিকভাবে গ্রামের দুজনকে ডাক দেই।
এসময় মাদক ক্রেতা লিটনের কাছে মাদকের বিষয়ে জানতে চাইলে মাদক ব্যবসায়ী জুয়েল বাবু ঝন্টু তার স্ত্রী লিমা বেগম ও তাদের সহযোগী আলতাব, জরিনা ও আজবানু বেগম দৌড়ে এসে মারপিট শুরু করে। আমি কোনকিছু বুঝে উঠার আগেই মাদক ব্যবসায়ী জুয়েল বাবু ঝন্টু তার হাতে থাকা ছোরা দিয়ে আমার মাথায় কোপ মারলে মাটিতে পড়ে যাই। পরে গ্রামবাসীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দা লোতফার রহমান ও গোলাম সরওয়ার বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে যদি হামলার শিকার হতে হয় তবে নিরাপত্তা কোথায়। মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কি প্রশাসনের কিছুই করার নেই। এর আগে জুয়েল বাবু ঝন্টু ও তার স্ত্রী লিমা বেগম মাদকসহ আটক হয়েছিল জামিনে বেরিয়ে এসে তারা আবারও তাদের মাদক ব্যবসা করছে কিন্তু প্রশাসন কিছুই করতে পারছে না। আমরা গ্রামকে মাদকমুক্ত করতে চাই।
অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এমনকি তাদের বাড়িতে গিয়েও কারও দেখা মেলেনি। মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, আহত যুবকের খোজখবর নেওয়া হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা হবে। তাকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ কাজ করছে।