বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলর সদর ইউনিয়নের নাচনাপাড়া ও উত্তর নাচনাপাড়া গ্রামের কাঁচা সড়ক দুটি ধীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ধান ক্ষেতের মাটির সাথে মিশে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে হাটু পরিমান কাদা হয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয়রা বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছে। এতে ভোগান্তিতে পরেছে ওই দুই গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দারা।
জানা গেছে, ২০১২ সালে আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাচনাপাড়া গ্রামের চানমিয়া প্যাদার বাড়ি থেকে জোলেখার বাড়ি পর্যন্ত ২ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক নির্মান করা হয়।
সড়কটি নির্মানের পর কোন সংস্কার না করায় ধীরে ধীরে সড়কের মাটি ধুয়ে পাশের ধানক্ষেতের সাথে মিশে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে সড়কের উপর পানি জমে এক হাটু কাঁদা জমে যায়। কাঁদা পেরিয়ে প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে মানুষের চলাচল দায় হয়ে পড়ে। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন নাচনাপাড়া, উত্তর নাচনাপাড়া ও চিলা গ্রামের প্রায় ৪-৫শ’ লোক আমতলী সদরে যাওয়ার জন্য চলাচল করে। পাশেই রয়েছে চিলা ফাজিল মাদরাসা ও দক্ষিণ আমতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা এই সড়কের কাঁদা পেড়িয়ে মাদরাসা এবং স্কুলে আসা যাওয়া করে। অনেক সময় পানি এবং কাদায় পরে তাদের জামা কাপড় বই খাতা নষ্ট হয়ে যায়। কাদার পরিমান এতো বেশী যে, বৃদ্ধ নারী এবং পুরুষরা এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে ভয় পায়। তাই নিরুপায় হয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা চাঁদার টাকায় বাঁশ এবং সুপারি গাছ কিনে ওই সড়কের উপর সাঁকো নির্মান করে চলাচল করছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নাচনা পাড়া গ্রামের প্রায় ১ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের অভাবে মাটির সাথে মিশে গেছে। সড়কটি মাটির সমান হওয়ায় তার উপর এখন পানি আর কাঁদায় ভরপুর। স্থানীয়রা বাঁশের সাঁকো তৈরী করে চলাচল করছে। স্থানীয় বাসিন্দা আমেনা বেগম বলেন, বাবা মোগো রাস্তায় এতো কাঁদা মোর জম্মে আর দেহি নাই। কাদার লইগ্যা একটা বঁাঁশের হাক্কা দেছে হেও কাঁদায় পিছলাইয়া পইর্যা যাই। মোগো অইছে মরন দশা।নাচনাপাড়া গ্রামের নিজাম বিশ^াস বলেন, ১৬ বচ্চর ধইর্যা রাস্তাডা কোন মেরামত করে না। মোরা নিরুপায় অইয়া বাঁশ দিয়া হাক্কা দিছি। এইয়ার উপরদিয়া একটু আডাচলা করি। এই রাস্তাডা যাতে সরকার কইর্যা দেয় হেইডা মোরা দাবী জানাই।দক্ষিণ আমতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. ইয়াকুব হোসেন বলেন, বৃষ্টির সময় রাস্তায় কাদা থাকায় ঠিক সময়ে স্কুলে আসা যাওয়া করতে পারি না। অনেক সময় বই খাতা কাদা পানিতে পরে গিয়ে নষ্ট হয়ে যায় এতে আমাদের জামা কাপরও নষ্ট হয়। যে দিন এঅবস্থা হয় সেদিন আর স্কুলে যেতে পারি না। পথ থেকেই বাড়ি ফিরে আসতে হয়।
অপর দিকে এই সড়কের বিপরীতে উত্তর নাচনাপাড়া গ্রামের সড়কটিরও একই অবস্থা। রাজিব সিকদার ষ্টোর থেকে লতিফ কাজির বাড়ী পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ১০ বছর ধরে সংস্কারের অভাবে বর্ষা মৌসুমে কাঁদায় ভরে যায়। সড়কে এত পরিমান বেশী কাঁদা যে কোন মানুষ নেমে আর উঠতে পারবে না। তাই নিরুপায় হয়ে গ্রামবাসী তাদের চলাচলের জন্য নিজেদের টাকায় কাঠ বাঁশ কিনে সাঁকো নির্মান করে এখন চলাচলাচল করছে। ওই গ্রামের বাসিন্দা কালাম বলেন, বাবা মুই একদিন কাদায় নাইম্যা আর ওঠতে পারি নাই হকুল্ডি ধইর্যা মোরে উডাইছে। হেইয়ার পর মোরা গ্রামবাসী মিল্লা রাস্তার উপর বাশ দিয়া হাক্কা দিছি।নাচনাপাড়া গ্রামের ইউপি সদস্য মো. বেল্লাল মাতুব্বর বলেন, এই সড়কটি সংস্কারের জন্য উপজেলা এলজিইডির নিকট একটি প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। আশা করি শুকনো মৌসুমে কাজ শুরু হবে।
আমতলী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. ইদ্রস আলী বলেন, সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে যেনে সড়কটি সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।