চুয়াডাঙ্গা শহরতলী দৌলদিয়াড়ে মাথাভাঙ্গা নদী থেকে মেমজান বেগম (৪০) মধ্যবয়সী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা।
শনিবার (১২ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয়রা মেমজানকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। এ সময় মেমজানের মাথা, মুখমণ্ডল সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে একাধিক আঘাতের চিহৃ দেখতে পাওয়া যায়।
মেমজান বেগন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলোকদিয়া ইউনিয়নের দৌলতদিয়াড় গ্রামের চুনুরিপাড়ার আব্দুস সামাদের স্ত্রী।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদুর রহমান দৈনিক দেশ বুলেটিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মেমজান বেগমের আত্মীয় এবং উদ্ধারকারি লিপি খাতুন দৈনিক দেশ বুলেটিনকে বলেন, মেমজানে শাশুড়ি দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ হয়ে বিছানাগত। তিনি প্রতিদিনের মত শনিবার সন্ধার পর শাশুড়ির মল-মুত্র বাড়ির সামনেই মাথাভাঙ্গা নদীতে ফেলতে গিয়েছিলেন। এরপর থেকে তিনি আর ফেরেননি। পরে অনেক খোজাখুজির পর সন্দেহ হলে একপর্যায়ে মাথাভাঙ্গা নদীতে খোজা শুরু হয়। এরপরই নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে এলাকাবাসী।
শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের বিষয়ে জানতে চাইলে লিপি খাতুন বলেন, মেমজান বেগম দীর্ঘদিন যাবত মৃগী (খিচুনি) রোগে ভুলছিলেন। আমাদের ধারণা নদীতে যাওয়ার পরই খিচুনি শুরু হলে ব্যালেন্স হারিয়ে পানিতে পড়ে যায়। এতে শরীরে আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারেন। এছাড়া মরদেহ উদ্ধারের সময়ও সবার হাত থেকে ফসকে পড়ে গিয়েছিল। এতে মাথায় জখম হয়। তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে মেমজান বেগমের স্বামী বা পরিবারের অন্য স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তারেক জুনায়েত দৈনিক দেশ বুলেটিনকে বলেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে পরিবারের সদস্যরা মেমজান বেগমকে মৃত অবস্থায় জরুরি বিভাগে নিয়ে এসেছিলেন। তার মাথা, মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে জখমের চিহৃ পাওয়া গেছে। পরিবারের দাবি, তিনি মৃগী রোগী ছিলেন। আর এই রোগীরা অনেক সময় আক্রান্ত হলে পড়ে যান এবং মৃত্যুও হতে পারে তাদের।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে তাই বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদূর রহমান দৈনিক দেশ বুলেটিনকে বলেন, শুনেছি মাথাভাঙ্গা নদীর পানিতে ডুবে তিনি মারা গেছে। মৃগী রোগী ছিলেন তিনি। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আঘাতের কারণে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হয়েছে। আগামীকাল (আজ) ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হবে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।