আইপিএলে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে দুই উইকেটে হারিয়েছে রাজস্থান রয়্যালস। সুনীল নারাইনের অসাধারণ সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ২২২ রানের বড় সংগ্রহ পায় আগে ব্যাট করা কলকাতা। জবাবে জস বাটলার বাদে রাজস্থানের কোন ব্যাটার ভালো করতে পারেননি। তবে একাই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন বাটলার।সেঞ্চুরি করেছেন নারাইন।কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামে কলকাতা। রাজস্থান বোলারদের কঠিন সময় উপহার দিয়েছেন কলকাতার ব্যাটাররা। ফিল সল্ট অল্পতে থামলেও এগিয়েছেন সুনীল নারাইন। তাকে দ্বিতীয় উইকেট যোগ্য সঙ্গ দেন অঙ্ক্রিশ রঘুবংশী। পাওয়ার প্লের শেষ দুই ওভারে ঝড় তোলেন তারা। যথাক্রমে তোলেন ১৪ ও ১৬ রান।জুটিতে নারাইনই বেশি মারমুখী ছিলেন। দশম ওভারে মাত্র ২৯ বলেই পেয়ে যান নিজের ফিফটি। পরের ওভারে কুলদীপ সেনের বলে রবিচন্দন অশ্বিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রঘুবংশী। তার ব্যাট থেকে ১৮ বলে পাঁচটি চারের সাহায্যে ৩০ রান। মাত্র ৪৩ বলে ৮৫ রানের জুটি গড়েন রঘুবংশী ও নারাইন।
এরপর বেশিক্ষণ স্হায়ী হয়নি অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারের ইনিংস। একটি করে চার ও ছয় হাঁকালেও ৭ বলে ১১ রান করে এবারের আসরের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী যুযবেন্দ্র চাহালের বলে এলবিডব্লু হন আইয়ার। তবে অন্যপ্রান্তে অবিচল ছিলেন নারাইন। ভাগ্যের সহায়তাও পেয়েছেন। আন্দ্রে রাসেলকে সাথে নিয়ে তিন ওভারের জুটিতে ৫১ রান তোলেন নারাইন যার সিংহভাগই নারাইনের রান। ১৬তম ওভারে যুযবেন্দ্র চাহালকে সীমানা ছাড়া করে ৪৯ বলে সেঞ্চুরি করেন নারাইন। ওই ওভারে কলকাতা তোলে ২৩ রান। সেঞ্চুরির পর বড় হয়নি নারাইনের ইনিংস।
ট্রেন্ট বোল্টের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৫৬ বলে ১৩টি চার ও ছয় ছক্কায় ১০৯ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন নারাইন। ‘বোলার’ হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করা এই তারকার টি-টোয়েন্টিতে প্রথম সেঞ্চুরি এটি। এরপর ঝড় তোলেন রিঙ্কু সিং। মাত্র ৯ বলে একটি চার ও দুই ছক্কায় ২০ রান করে কলকাতার রানকে দুইশর ওপারে নিয়ে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত ছয় উইকেটে ২২৩ রানে থামে কলকাতা নাইট রাইডার্স।দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেছেন বাটলার।জবাব দিতে নেমে ঝড়ো শুরু করেন রাজস্হানের দুই ওপেনার যশস্বী জাইসওয়াল ও জস বাটলার। মিচেল স্টার্কের করা ইনিংসের প্রথম ওভারেই ১১ রান তোলেন তারা। পরের ওভারে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন জাইসওয়াল। মাত্র ৯ বলে তিনি করেন ১৯ রান। ব্যক্তিগত দুই রানে জীবন পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। হর্ষিত রানার বলে নারাইনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৮ বলে ১২ রান করেন তিনি।পরের ওভারে ২৩ রান তোলে রাজস্থান। ওই ওভারে বৈভব অরোরাকে চারবার সীমানা ছাড়া করেন রিয়ান পরাগ ও জস বাটলার। পাওয়ার প্লেতে ৭৬ রান তোলে রাজস্থান। অষ্টম ওভারে হর্ষিতের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরে যান পরাগ। ১৪ বলে চারটি চার ও দুই ছক্কায় তিনি করেন ৩৪ রান। পরের ওভারেই ধ্রুব জুরেলকে এলবিডব্লু করেন সেঞ্চুরিয়ন নারাইন। ফলে ১০০ রানে চার উইকেটের দলে পরিণত হয় রাজস্থান।
চেষ্টা করলেও বড় হয়নি অশ্বিনের ইনিংস। দলীয় ১২১ রানে বরুণ চক্রবর্তীকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ৮ রানে আউট হন তিনি। পরের বলেই গোল্ডেন ডাক হয়ে ফেরেন ক্যারিবিয়ান পাওয়ার হিটার শিমরন হেটমায়ার। এক প্রান্তে ব্যাটারদের আসা-যাওয়া দেখলেও এগিয়ে যেতে থাকেন বাটলার। মাত্র ৩৬ বলে পেয়ে যান নিজের ফিফটি। ১৫ ও ১৬ তম ওভারে ১৭ রান তোলে রাজস্থান। নারাইনকে চার-ছক্কা হাঁকালেও পাওয়েলকে সাজঘরের পথ দেখান এই স্পিনার। ১৩ বলে তিনটি ছয় ও এক চারে ২৬ রান করেন পাওয়েল। শেষ তিন ওভারে ৪৬ রানের প্রয়োজন ছিল রাজস্থানের। বাটলারকে স্ট্রাইকে রাখতে রানআউটে কাটা পড়েন বোল্ট। মিচেল স্টার্কের ওভারে ১৮ রান তোলার পর হর্ষিত রানার ওভারে ১৯ রান তোলেন বাটলার। শেষ ওভারে সেঞ্চুরি করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। ৬০ বলে নয়টি চার ও ছয় ছক্কায় ১০৭ রান করেন বাটলার।