এক করোনা মহামারী থেকে রক্ষার জন্য, প্রতিষেধক হিসেবে নিলেন করোনা টিকা। কিন্তু সেই টিকাই যেনো আজ কাল হয়ে দাঁড়ালো জীবনের!
করোনাভাইরাসের টিকা গবেষণায় দুটি বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা। অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের ৯ কোটি ৯০ লাখের বেশি মানুষের ওপর পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে করোনা টিকার দুই বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, স্নায়ুতান্ত্রিক অস্বাভাবিকতা ও মেরুদণ্ডের স্ফীতি।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বহুজাতিক সংস্থা গ্লোবাল ভ্যাকসিন ডেটা নেটওয়ার্কের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়েছে গবেষণাটি। গত সপ্তাহে গবেষণা প্রবন্ধটি প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী ‘ভ্যাকসিন’। প্রবন্ধে গবেষকরা বলেছেন, যারা এমআরএনএ টিকা ফাইজার এন বায়োএনটেক কিংবা মডার্না টিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন, তাদের একাংশ এরই মধ্যে মায়োকার্ডিটি নামে হৃৎপিণ্ডের সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং হচ্ছেন। এ সমস্যায় আক্রান্তরা হার্টের মাংসপেশির সার্বক্ষণিক প্রদাহে ভোগেন।
গ্লোবাল ভ্যাকসিন ডেটা নেটওয়ার্কের গবেষকদের মতে, ফাইজার এবং মডার্নার দ্বিতীয় ডোজ মায়োকার্ডিটির ঝুঁকি ২ দশমিক ৯ গুণ এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৃতীয় ডোজ পেরিকার্ডিটির ঝুঁকি ৬ দশমিক ৯ গুণ বৃদ্ধি করে। মায়োকার্ডিটি ও পেরিকার্ডিটি উভয়ই বেশ বিরল শারীরিক জটিলতা।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অন্যান্য ভাইরাল-ভেক্টর করোনা টিকা এবং এমআরএনএ টিকা ফাইজার-মডার্নার ডোজে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া, গুলিয়ান-ব্যারে সিন্ড্রোম এবং মায়েলিটিসের মতো শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে ২ দশমিক ৫ গুণ। গুলিয়ান ব্যারে সিন্ড্রোমে আক্রান্ত রোগীরা স্নুায়বিক সমস্যায় ভোগেন আর মায়েলিটিসে আক্রান্তরা ভোগেন মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডের প্রদাহে।
গ্লোবাল ভ্যাকসিন ডেটা নেটওয়ার্কের যে বিজ্ঞানী দলটি এ গবেষণা পরিচালনা করেছে, সে দলের অন্যতম সদস্য এবং ডেনমার্কের স্টাটেন্স সিরাম ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ক্রিস্টিনা ফেকসোভা এক বিবৃতিতে নিজেদের গবেষণা প্রবন্ধ সম্পর্কে বলেন, ‘ব্যাপারটি এমন নয় যে আমরা করোনা টিকার ডোজকে ক্ষতিকর বলে প্রচার করছি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কোটি কোটি মানুষ বিভিন্ন করোনা টিকার ডোজ নিয়েছেন এবং তাদের অধিকাংশই হয়তো এখনো কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করেননি। তবে এমন খবরে আতংকে বাংলাদেশের গ্রাম ও শহরের মানুষ।
চট্টগ্রাম কিছু ডাক্তারের সাক্ষাৎকারে জানা যায় বাংলাদেশও এমন লক্ষণের রুগী পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করেন তারা।কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগেছেন বা ভুগছেন এমন মানুষের সংখ্যা কম হলেও তারা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তাদের এসব সমস্যা টিকা প্রস্তুকারী কোম্পানিগুলোকে এই বার্তা দেয় যে, করোনা টিকাগুলো আরো নিরাপদ ও নিখুঁত হওয়া প্রয়োজন।এবং যতদ্রুত সম্ভব এই সমস্যা সমাধান করা এটাই আজ বিশ্ব মানুষের কাম্য।