1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০১:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
টাঙ্গাইলে রাজস্ব প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীর ভূমি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যদি নির্বাচন হয় বিএনপি বিপুল ভোটে সরকার গঠন করবে –খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ও সাবেক সংসদ সদস্য ইন্জি: তুহিন সরিষাবাড়ীতে ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার ময়মনসিংহ সদরের অষ্টধার- কুষ্টয়া ইউনিয়নের উন্নয়নের কাজের পরিদর্শন করলেন ইউএনও মোংলায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদ মাদকের প্রতিবাদ করায় সরিষাবাড়ীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে আহত ভূরুঙ্গামারীতে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত রংপুরে জোর করে জমি দখলে নিয়ে পরিবারকে ভূমিহীন করার পাঁয়তারা শিবগঞ্জে যৌতুকের ৫ লক্ষ টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে মারপিট করে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা পদ্মা সেতু দক্ষিণে ভুয়া র‍্যাব পরিচয়ে প্রতারণা, রাজশাহীর আশিকুর গ্রেপ্তার

আটঘরিয়ায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক দুই মামলা; গ্রেপ্তার নেই

মোঃ রাকিবুল ইসলাম
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২১ মে, ২০২৫
  • ৩৯ বার পড়া হয়েছে

পাবনার আটঘরিয়ায় বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষের ঘটনার পাঁচদিন পর পৃথক দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে একটি ও জামায়াতের পক্ষ থেকে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এলাকার পরিস্থিতি এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে। আটঘরিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে উভয় পক্ষ পৃথক এজাহার দিয়েছে। তারপর মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে মামলা দুটির আসামিদের নাম জানাতে অপারগতা জানান ওসি। তার মধ্যে বিএনপির দায়ের করা মামলার বাদি হলেন আটঘরিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্ববায়ক আছিম উদ্দিন। মামলায় জামায়াতের নামীয় ১২৪ জন এবং অজ্ঞাতনামা অনেককে আসামি করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৭। এই মামলায় উপজেলার বিএনপির অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ করা হয়েছে। অপরদিকে, জামায়াতের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলার বাদি আটঘরিয়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মো. নকিবুল্লাহ। মামলায় বিএনপির নামীয় ৩৬ জন এবং অজ্ঞাতনামা ১২০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৮। এই মামলায় উপজেলা জামায়াতের অফিসে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ ও মারধরের অভিযোগ করা হয়েছে। আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুজ্জামান বলেন, মামলা দু’টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। যারা ঘটনার সাথে যারা জড়িত তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। পুলিশের ভূমিকা সন্তোষজনক নয় জামায়াতের এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, আমরা চাকরী করতে এসেছি। এখন কোনো দলই ক্ষমতায় নেই। আমরা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবো। আমাদের যে কাজ আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সে কাজ করবো। ঘটনার বিষয়ে ইউএনও যা বললেনঃ সেদিনের ঘটনার বিষয়ে আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ‘সেদিন মনোনয়ন ফরম তুলতে বাধা দেয়ার বিষয়টি কলেজ অধ্যক্ষ প্রথমে জানায়। আমি থানার ওসিকে ফোন দিলে তিনিও সেখানে যান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এছাড়া জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রথমে মৌখিকভাবে আমাকে জানায়। পরে তারা লিখিত অভিযোগও দিয়েছে। সেদিনই বিকেলে দুই পক্ষকে ডেকেছি। কিন্তু তার আগেই হঠাৎ করে অনাকাংখিত ঘটনা ঘটে গেল।’ ইউএনও মিনহাজুল আরো বলেন, ’ঘটনার পর কলেজের কমিটির সদস্যরা আমরা বসেছিলাম কি করা যায় এটা নিয়ে। এখনও আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। বিধি ও নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী করণীয় বিষয়ে আমরা কার্যক্রম চালাচ্ছি।’ বিএনপি জামায়াতের অফিস ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছিলেন কি না এবং সেখানে কি অবস্থায় দেখেছিলেন জানতে চাইলে তিনি সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি। দেবোত্তর বাজার জামে মসজিদে পরদিন শুক্রবার (১৬ মে) জুমআর নামাজ হয়নি কেন জানতে চাইলে ইউএনও মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি আমি জেনেছি নামাজের আগ মুহুর্তে। জুমআর নামাজের পর বিষয়টি বসে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছি। আর ওই সময় তাৎক্ষনিকভাবে কাউকে পাওয়াও যাচ্ছিল না। পরে সেটি সমাধান হয়ে গেছে।’ সেদিন কি ঘটেছিল? জুমআর নামাজ কেন হয়নি? ঘটনার পরদিন শুক্রবার (১৬ মে) দেবোত্তর বাজার জামে মসজিদে জুমআর নামাজ কেন হয়নি জানতে চাইলে সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে মসদিজের ঈমাম মাওলানা মো. বেলাল হোসাইন বলেন, ‘ঘটনার দিন রাত আটটা। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাস্থলে ডেকেছিলেন কথা বলার জন্য। কিন্তু সেখানে কথা বলার এক পর্যায়ে এশার নামাজের সময় হয়ে যাওয়ায় আমি ইউএনও স্যারকে বলে চলে আসতে উদ্যত হই। এমন সময় বিএনপি নেতা আছিম উদ্দিনের ছেলে মিল্টন আমাকে ডেকে মুখের উপর একটা ঘুষি মেরে দেন। এ সময় ওসি সাহেব তাদের ধমক দেন যে একজন ঈমাম সাহেবের গায়ে হাত তোলে কেন। সবাই ঘটনাটা দেখেছেন। অথচ আমি কোনো মিছিল মিটিং এ যাই নাই। সার্বক্ষনিক মসজিদে ছিলাম। মাওলানা বেলাল আরো বলেন, ‘তারপর রাতে এশার নাম পড়ে বাসায় যাই। ভোরে ফজরের নামাজ মসজিদে আমি একাই পড়ি। কেউ আসেনি। কারণ রাতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়েছিল। সকালে আমারহয়েছিল। সকালে আমার বেয়াইয়ের ছেলে জানায় অবস্থা ভাল না। আপনি দ্রুত এখান থেকে চলে যান। তখন আমি মসজিদের সভাপতি ও সেক্রেটারীকে জানাই। তারা খোঁজ নিয়ে আমাকে বলেন আসলেই পরিবেশ বেগতিক। চাবি কারো কাছে দিয়ে চলে যাও। আমরা তোমার নিরাপত্তা দিতে পারবো না। তখন সেক্রেটারীর কথামতো মসজিদের চাবি উজ্জল নামের একজনের কাছে চাবি দিয়ে দ্রুত চলে যাই। পরে মসজিদে তালা দেয়া, নামাজ না হওয়ার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। মুলত আমার নিজের নিরাপত্তার জন্য মসজিদের সভাপতি সেক্রেটারীর পরামর্শে অন্যত্র চলে যেতে হয়েছিল।’ (আগে যা ঘটেছিল) উল্লেখ্য, পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর ডিগ্রী (অনার্স) কলেজের অভিভাবক সদস্য পদে মনোনয়ন ফরম তোলা নিয়ে গত ১৫ মে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় দুই দলের দলীয় কার্যালয় এবং ২৩টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনা উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। জামায়াতের অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গিয়ে আগুন নেভায়। পরদিন অফিসে গিয়ে দেখেন কোরআন শরিফ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে পরদিন পৃথক বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচী পালন করে দুই দল। একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠে পরিস্থিতি। ‌এর মধ্যে গত ১৭ মে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব প্রকাশ্যে হুশিয়ার দিয়ে বলেন, ‘পাবনার আটঘরিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর কোনো মুয়াজ্জিন আজান দিতে পারবেন না এবং কোনো ঈমাম নামাজ পড়াতে পারবেন না।’ তাঁর এই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই বক্তব্যে হাবিব আরো বলেছিলেন, ‘গত শুক্রবার (১৬ মে) আটঘরিয়ার দেবোত্তর বাজার জামে মসজিদে জামায়াতের কারণে মানুষ জুমাআর নামাজ পড়তে পারেনি। তালা দিয়ে পালিয়েছে তারা। কতটা ন্যক্কারজনক ঘটনা। জামায়াত মিথ্যা কথা বলে। এদের পেছনে নামাজ হয় না।’ এ বিষয়ে আটঘরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা নকীবুল্লাহ বলেছিলেন, হাবিব সাহেব বিএনপির একজন দায়িত্বশীল হয়ে আজান ইমামতি নিয়ে এতো বড় ন্যাক্কারজনক বক্তব্য দিয়েছেন। এর জন্য তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ওনার এই বক্তব্য মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। সবাই ধিক্কার জানিয়েছে। মিথ্যা কথা বলে তিনি নাটক রচনা করছেন। নামাজরত অবস্থায় বিএনপির এসব সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর গুলি করেছে। ঈশ্বরদী থেকে সন্ত্রাসী বাহিনী এনে আমাদের ওপর স্বশস্ত্র হামলা করেছে। আমাদের অফিস পুড়িয়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি। কোরআন শরিফও পুড়িয়েছে। আমাদের লোকজনের দোকান বাড়িঘর পাট ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। গত পরশু জুমার নামাজ পড়তে দেয়নি বিএনপির লোকজন। মসজিদে তালা দিয়ে চাবি নিয়ে ইমামকে হুমকি দিয়ে চলে গেছে।

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com