বরগুনার আমতলী উপজেলায় বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজের লেকের পানি নিস্কাশনের জন্য পাইপ স্থাপনে বাঁধা দিয়েছে স্থানীয় এক ভূমিদস্যু চক্র। রবিবার দুপুরে পৌরসভার উদ্যোগে পাইপ স্থাপন করতে গেলে কলেজের শিক্ষক ও পৌরসভার কর্মীদের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাবুল মিয়া নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ সময় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২৬ জুন শুরু হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা। ওইদিন প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিবে। কিন্তু কলেজের সামনে লেকের পানি নিস্কাশন বন্ধ থাকায় চরম দুর্গন্ধ ও পরিবেশ দূষণে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে গ্রহণেও শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে আমতলী পৌরসভার কালিবাড়ি এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজ। কলেজের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে সামনের অংশে একটি লেক নির্মাণ করা হয়। সম্প্রতি স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল মিয়া বালুর বস্তা দিয়ে পানি নিস্কাশনের পথ আটকে দেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পৌরসভা এই বাধা অপসারণ করে পাইপ স্থাপনের উদ্যোগ নিলে বাবুল মিয়া, তার ছেলে হাসিব ও সোয়েব, স্ত্রী রিনা বেগম ও শাশুড়ি আলেয়া বেগমসহ ১০-১২ জন মিলে শিক্ষকদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও ধাওয়া করেন।
কলেজের শিক্ষক বাছির উদ্দিন, সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ, কবির হোসেন, উত্তম কুমার কর্মকার ও মাকসুদুর রহমান বলেন, “লেকের জলাবদ্ধতার কারণে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান অসম্ভব হয়ে পড়েছে। পৌরসভা যখন পানি নিস্কাশনে এগিয়ে আসে, তখন হামলা চালিয়ে বাধা দেওয়া হয়—যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও দণ্ডনীয় অপরাধ।”
এ বিষয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোছাঃ ফেরদৌসি আক্তার বলেন, “বাবুল মিয়া কলেজের জমির ওপর অবৈধভাবে দখল তৈরি করে পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। পরীক্ষা বানচাল করতেই এমন সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালানো হয়েছে।”
অন্যদিকে অভিযুক্ত বাবুল মিয়ার স্ত্রী রিনা বেগম দাবি করেন, “কলেজের লেকের পানি আমার জমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে আমার ক্ষতি হচ্ছে বলে আমি বাধা দিয়েছি। ধারালো অস্ত্র নিয়ে কাউকে ধাওয়া দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা।”
আমতলী পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশিদ বলেন, “পানি নিষ্কাশনে পাইপ স্থাপনের সময় বাধা দেওয়ার পাশাপাশি হামলার চেষ্টা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
আমতলী থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে কলেজের শিক্ষার্থীরা দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ ও নিরাপদ পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।