ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে আজ কোন স্বাধীনতা নেই। দেশের মানুষ আজ দেশের ভেতরেই পরাধীনভাবে জীবনযাপন করছে। বিরোধী দল করলেই বা বিরোধী মতের হলেই আজ দেশের সাধারণ মানুষকেও এ দেউলিয়া সরকার আসামি বানিয়ে দেয়। এ সরকার সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার সব অধিকার হরণ করেছে। রুহিয়া থানা বিএনপির আয়োাজনে ১৪ এপ্রিল, রবিবার বিকেলে রুহিয়ায় জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম তৈমুর রহমানের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারের দেউলিয়া হওয়া নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকার আজ দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে যার প্রমাণ মেলে তাদের রাষ্ট্র পরিচালনা দেখে। তারা রাষ্ট্র যন্ত্র ছাড়া কোন কাজই করতে পারেনা। তারা এমন দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে যে আজ পুলিশ দিয়ে দেশ পরিচালনা করতে হচ্ছে তাদের। তাদের দেউলিয়াত্ব এতটাই বেড়েছে যে তা ঢাকতে তারা এমন তামাশার নির্বাচন করেছে। ১৪ সালে সাধারণ মানুষ নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেও তারা জয়ী হয়, আবার ১৮ এর নির্বাচন তারা আগের রাতেই করে ফেলে, এবার ডামি প্রার্থী দিয়ে ডামি নির্বাচন করেছে। আওয়ামী লীগ আর আওয়ামী লীগ নেই তারা আজ পুরো দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমার নামে ১’শ ১১ টি মামলা রয়েছে। আর আমাকে জেলে যেতে হয়েছে প্রায় ১১ বার। এ বৃদ্ধ বয়সেও আমাকে এমন হাস্যকর মামলা গুলো দিয়ে হেনস্থা করছে তারা। মেগা প্রজেক্ট এর নামে মেগা দুর্নীতিগুলোর বিষয়ে আমরা কথা বলি তাই এমন হাস্যকর মামলা খেতে হচ্ছে আমাদের। দেশের ব্যাংকগুলোকে এ সরকার শেষ করে দিয়েছে। নানা সরকারি বেসরকারি নিয়োগের টাকা খেয়ে আর ব্যাংক এর টাকা চুরি করেই এ সরকার আর সরকারের লোকেরা টিকে থাকছে। আমরা এমন দেশ চাইনি।
এমন দেশ গড়ার জন্যও আমরা যুদ্ধ করিনি। বেগম জিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভীষণ অসুস্থ্য। তার অতিসত্তর লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা খুব জরুরি। না হলে তাকে আর বাঁচানো যাবেনা। অথচ তার চিকিৎসা নিয়েও সরকার নানা টালবাহানা করছে। পরিশেষে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম তৈমুর রহমানের কথা স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আমরা প্রায় ৩২ বছর এক সাথে পথ চলেছি। আমি রাজনীতি করতে গিয়ে দূরে চলে গেলাম আর ঠাকুরগাঁওকে রেখে গেলাম তৈমুর সাহেবের কাছে। তিনি বেঁচে থাকতে বলতেন, ‘এমন দেশ আমরা চাইনি আর এমন দেশ গড়ার জন্য আমরা যুদ্ধ করিনি। আমরা তাজা রক্ত দিয়ে যুদ্ধ করেছি দেশ আর দেশের মানুষকে স্বাধীন দেখতে। তা আর দেখতে পারছি না।’ রুহিয়া থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে এ সময় আরো বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিমসহ দলটির অন্যান্য নেতা কর্মীরা।