আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যস্ত নির্বাচন, হরতাল অবরোধ নিয়ে এই সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীরা অবাধে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। রাজধানীর বনানীতে এতদিন আত্মগোপনে থাকা মাদক ব্যবসায়ীরাও আবার এলাকায় ফিরে এসে মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বনানী থানাধীন প্রতিটি পাড়ামহল্লার অলিগলিতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে মাদক। সমাজের উঠতি বয়সের ছেলেরা যেমন এ নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছে তেমনি স্কুল ও কলেজগামী ছাত্ররাও ইয়াবার নেশায় জড়িয়ে পড়ছে। প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা চললেও প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। তারা এখন রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত। এই সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। অন্যদিকে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে যুবসমাজ।
বনানী থানা পুলিশের সোর্স গোডাউন বস্তির শহীদ ও তার সহযোগি ওয়্যারলেস গেইট এলাকায় ড্রাইভার কাশেম, মহাখালী মধ্যপাড়ার শরিফ, মহাখালী পুরাতন বাজার এলাকায় মানিকসহ আরো কয়েকজন এতদিন আত্মগোপনে থাকলেও এখন তারা আবার মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হয়েছে। প্রকাশ্যে তাদের মাদক কেনাবেচা করতে দেখা যাচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, শুধু বনানীতে নয় রাজধানীর গুলশান, বাড্ডা, নাখালপাড়া, টঙ্গী, দক্ষিণখান এলাকায় তারা হোম ডেলিভারিতে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
মাদক ব্যবসার পাশাপাশি চুরি, দেহ ব্যবসা, চাঁদাবাজি ব্ল্যাকমেইল, অপহরন সহ এমন কোন হীন অপরাধের ঘটনা নেই যে তারা করছেনা, কিন্তু শত অপরাধ করেও তারা পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাহিরে।
বনানী থানাধীন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এলাকাবাসীর সঙ্গে আলাপকরে জানা যায়, বনানী থানা পুলিশের সোর্স শহীদ এখন ঘরে ঘরে ভয়ংকর ইয়াবা ব্যবসা ছড়িয়ে দিয়েছে। তার সাথে যারা ব্যবসা করে তারা থাকে ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। আর যারা শহীদের সাথে মাদক ব্যবসা করে না তাদের ধরিয়ে দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, এলাকাভিত্তিক সরকারদলীয় কিছু সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ শহীদদের মতো মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয় দিচ্ছে। থানা পুলিশও এদের বিরুদ্ধে নিচ্ছে না কোনো আইনগত ব্যবস্থা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব মাদক কারবারির কাছ থেকে মাসোয়ারা পাওয়ার কারণে পুলিশ এদের গ্রেফতার করছে না। তবে যাদের কাছ থেকে পুলিশ মাসোয়ারা পাচ্ছে না কেবল তাদেরকে ইয়াবা, গাঁজা ও ফেনসিডিলসহ আটক করছে।
সোর্স শহীদের অধীনে মহাখালী মধ্যপাড়ায় শরিফের বিল্ডিংয়ে চলে ইয়াবা, গাঁজা কেনাবেচা ও সেবন। ২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের পাশে ভ্রাম্যমাণভাবে ইয়াবা ব্যবসা করে বুলুর ড্রাইভার কাশেম। সন্ধ্যার পর কাউন্সিলর কার্যালয়ের আশপাশে ইয়াবা সেবনকারীদের আনাগোনা বৃদ্ধি পেতে থাকে। মহাখালী ওয়্যারলেস গেইট এলাকার সব মাদক ব্যবসায়ীরা ব্যবসা ছেড়ে ভালো হয়ে গেলেও বর্তমানে ড্রাইভার কাশেম একমাত্র মাদক ব্যবসায় সক্রিয়।
এদিকে পাঠাও চালকের ছদ্দবেশে হোমডেলিভারিতে ইয়াবা ব্যবসা করছে মহাখালী পুরাতন বাজারের মানিক। ফোন করলেই ইয়াবা পৌঁছে দেয় ঘরে। মাঝে বাড্ডা থানায় বিপুল পরিমাণ ইয়াবা সহ গ্রেফতার হয় মানিক। পরে জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকে। বর্তমানে মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের ঢিলে ভাবে বনানী এলাকায় আবার মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে মানিক।
এদের সকলের মাদক ব্যবসার মূল হোতা বনানী থানা পুলিশের সোর্স শহীদ। সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শহীদের ঘরে চলে জুয়া খেলা, মাদক কেনাবেচা ও সেবন। এসময় তার ঘরে পুলিশের আনাগোনাও দেখা যায়। পুলিশের সাথে সখ্যতা থাকায় দীর্ঘদিন ধরে শহীদ রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাহিরে।